কিয়ামতের বর্ণনা pdf ডাউনলোড

কিয়ামতের বর্ণনা pdf Download, মাওলানা মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী বই pdf download keyamoter bornona pdf download
কিয়ামতের বর্ণনা pdf Download, মাওলানা মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী বই pdf download keyamoter bornona pdf download


কিয়ামতের বর্ণনা - কিছু হাদীসের উদ্ধৃতি

১: মানুষের জন্ম থেকে নিয়ে তার মৃত্যু পর্যন্ত যত দুঃখ কষ্ট হয়, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হবে মৃত্যুর কষ্ট, আর মৃত্যুর পর আগত সমস্ত স্তর সমূহের কষ্ট, মৃত্যুর কষ্ট থেকে অনেক বেশি হবে। (ত্বাবারানী)

২: লোকেরা স্বীয় কবর থেকে উলঙ্গ ও খাতনাহীন হয়ে উঠবে, আয়শা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) পশ্ন করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেরা একে অপরের প্রতি তাকাবে না? তিনি বললেনঃ ঐ দিনের বিপদ এত কঠিন হবে যে, কেউ কারো দিকে তাকানোর কথা মনেই পড়বে না। (মুসলিম) 

৩। হাশরের মাঠে যেখানে মানুষ উলঙ্গ অবস্থায় উঠবে সেখানে সূর্য এক মাইল দূরে থাকবে, লোকেরা স্বীয় আমল অনুপাতে ঘামের মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে, কারো টাখনা পর্যন্ত, কারো হাটু পর্যন্ত, কারো কোমর পর্যন্ত, আবার কারো মুখ পর্যন্ত। (মুসলিম)

৪। হাশরের দিনটি পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান হবে। (মুসলিম) হাশরের মাঠে মানুষের এত কষ্ট হবে যে, সে তা সহ্য করতে পারবে না (বোখারী)

কোন ব্যক্তির মুখ পর্যন্ত ঘাম হবে, আর সে দূয়া করবে হে আমার প্রভূ! এ মুসিবত থেকে আমাকে মুক্তি দিন। যদিও জাহান্নামেই পাঠানো হোক না কেন? (ত্বাবারানী)

৫ । যখন পুলসিরাত জাহান্নামের উপর রাখা হবে, তখন সর্ব দিক অন্ধকার হয়ে যাবে, এমতাবস্থায় লোকদেরকে পুলসিরাত অতিক্রম করার জন্য বলা হবে, যা চুলের চেয়েও হালকা হবে এবং তরবারীর চেয়েও তীক্ষ্ণ হবে। এসময় সমস্ত নবীগণও আল্লাহ্র নিকট নিজের জন্য ক্ষামা চাইতে থাকবে। (মুসলিম) 

এ সমস্ত আয়াত ও হাদীস থেকে এ অনুমান করা কষ্টকর নয় যে, মৃত্যুর পর আগত স্তরসমূহ এত কষ্টকর হবে যে তা না, লেখে শেষ করা যাবে আর না, বলে শেষ করা যাবে। কিয়ামতের শুরু হবে সিঙ্গায় ফুঁ দেয়া থেকে, যে ব্যাপারে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ইস্রাফিল (আঃ) সিংঙ্গায় মুখ দিয়ে প্রস্তুত হয়ে আছেন, আল্লাহ্ নির্দেশ দেয়া মাত্র সিঙ্গায় ফুঁ দিবে এবং কিয়ামত শুরু হয়ে যাবে ।


সহীহ মুসলিমের বর্ণনা অনুযায়ী এঘটনা শুক্রবারে ঘটবে। মনুষ নিজ নিজ কাজে মগ্ন থাকবে, আর হঠাৎ করে পূর্ব পশ্চিমের সমস্ত লোক একটি লম্বা আওয়াজ শুনবে, যা আস্তে আস্তে উঁচু হতে থাকবে, এ অস্পষ্ট আওয়াজে ভয়ে ভীত হয়ে মানুষ কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে যাবে, যখন এ আওয়াজ আকাশের গর্জনের ন্যায় বিকট হতে থাকবে তখন মানুষ মরতে শুরু করবে। যে ব্যক্তি যেখনে আছে সে সেখানেই পড়ে যাবে, ইস্রাফিলের সিঙ্গার আওয়াজ যত বিকট হতে থাকবে পৃথিবীর অবস্থা তত পরিবর্তন হতে থাকবে, পৃথিবী ধুলাবালীর সাথে একাকার হয়ে যাওয়া ফানুসের ন্যায় হয়ে, কম্পন শুরু করবে। পাহাড় ধুলাবালী হয়ে উড়তে শুরু করবে, সমুদ্রে আগুন জ্বলতে থাকবে, আকাশ ফেটে যাবে, চন্দ্র-সূর্য, তারকারাজী, আলোহীন হয়ে যাবে। সমস্ত জীব, মানুষ, জ্বিন, ফেরেশতা, শেষ হয়ে যাবে। এমনকি মালাকুল মাওত ও মৃত্যুবরণ করবে। সমস্ত জীব জন্তু শেষ হয়ে যাবে, শুধু এক মাত্ৰ মহিমাময় মহানুভব আল্লাহই বাকী থাকবেন। আর আল্লাহ্র এ বাণী বাস্তবে রূপ নিবে।

আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস আমল সংশোধনের উত্তম পদ্ধতি

মৃত্যুর পর দ্বিতীয়বার জীবিত হয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হয়ে, স্বীয় আমলের জওয়াবদেহী করার আকীদা এমন এক ব্যতিক্রম ধর্মী আকীদা যে, যে ব্যক্তি সত্য অন্তকরণে, আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস করেছে, তার জীবনে তা বিরাট পরিবর্তন আনবে। কোরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনাবলী এ সত্যের সাক্ষী দেয়, যে ব্যক্তি বা জাতি পরকাল অবিশ্বাস করত তারা দুনিয়াতে যালেম, অপহরণ, নাফরমানী এবং অবাধ্য হয়ে জীবন যাপন করছে। পৃথিবীতে ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি করেছে। রক্তপাত করেছে, ক্ষেতি বাড়ী বরবাদ করেছে। কিন্তু যে ব্যক্তি বা জাতি আখেরাতে বিশ্বাসী হয়েছে তাদের জীবন দিন দিন পরিবর্তন হয়েছে, যারা আগে যালেম, অপহরণকারী ছিল, সে শান্তি ও নিরাপত্তার ধারক বাহক হয়ে গেছে। যারা আগে একে অপরের রক্তপাতের প্রতি কাঙ্খিত ছিল, তারা একে অপরের সংরক্ষক হয়ে গেছে। যে আগে চুরী ডাকাতী করত, সে মোতাকী পরহেযগার হয়ে গেছে। যে প্রথমে খিয়ানতকারী ও মিথ্যুক ছিল, সে বিশ্বাসী ও সত্যবাদী হয়ে গেছে।

এর হাকীকত এইযে, পরকালে বিশ্বাসী হওয়া, মানুষের মধ্যে এমন এক পাহারাদার নিযুক্ত করে যে, তাকে কদমে কদমে প্রত্যেক ছোট বড় গোনাহ থেকে বাঁধা দেয়। তাকে যালেম, অপহরণ, নাফরমানী করতে দেয় না। সর্বদা চাই একাকী হোক আর জনসম্মুখে, দিনের আলোতে হোক আর রাতের অন্ধকারে, আল্লাহ্র নিকট জওয়াবদেহিতার ভয় তাকে ভীত সন্ত্রস্ত করে রাখে।

হাশরের মাঠে সম্মানজনক কর্মসমূহ

পরকালে বিশ্বাসী, সৎ লোকদের আচরণ কবর থেকে উঠার পর পরই কাফের, মুশরেক, ফাসেক, ফাজেরদের থেকে ভিন্ন হবে। ঈমানদ্বারদের ওপর ঐ ধরণের ভয় ভীতি হবে না যা অন্যদের হবে। হাশরের মাঠে যাওয়ার সময়ও তাদের জন্য যানবাহন প্রস্তুত করে রাখা হবে। আর তারা আল্লাহ্র রহমত ও জান্নাতের প্রতি কামনা নিয়ে হাশরের মাঠে উপস্থিত হবে। হাশরের মাঠেও আল্লাহ্ তাদেরকে স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহে ঐ দিনের চিন্তা ও কঠিন মুসিবত ও কষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। হাশরের মাঠের পঞ্চাশ হাজার বছরের দীর্ঘ এক দিন তাদের নিকট জোহর ও আসরের মধ্যবর্তী সময়ের মত মনে হবে। (হাকেম)

কাফেরদের ওপর যখন হাশরের মাঠে মৃত্যুদায়ক কষ্ট শুরু হবে তখন তা ঈমানদারদের জন্য শর্মির ন্যায় কষ্ট বলে মনে হবে। (আহমদ) সাধারণত ঈমানসহ সমস্ত নেক আমল মানুষকে হাশরের মাঠের সর্ব প্রকার ভয়-ভীতি, চিন্তা

থেকে হেফাজত করবে। (আল্লাহর বাণীঃ )

অর্থঃ “যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে এর চেয়ে উৎকৃষ্টতর প্রতিফল পাবে এবং সেদিন তারা আশংকা থেকে নিরাপদে থাকবে।" (সূরা নামলঃ ৮৯)

তাই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এমন কিছু আমলের কথা বলেছেন যা ঈমানদারদেরকে হাশরের মাঠে শুধু ঐ দিনের ভয় ভীতি থেকেই রক্ষা করবে না বরং বিশেষ সম্মানেরও কারণ হবে। আবার কিছু কিছু আমল ঈমানদারদেরকে আল্লাহর আরশের নিচে স্থান করে দিবে।

পৃথিবীর সম্মান পরকালের সম্মানের সাথে মোটেও তুলনা যোগ্য নয়। কিন্তু ভাল করে চিন্তা করে দেখুন, যদি কোন ছাত্র পরীক্ষায় পাস করে স্বর্ণ পদক পায়, কোন ব্যক্তি কোন বড় ধরণের খেদমতের কারণে সরকারের পক্ষ থেকে কোন সম্মান লাভ করে, বা যুদ্ধের ময়দানে কোন অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শনের কারণে কোন সৈন্য কোন পুরস্কার লাভ করে, তাহলে তার আনন্দের কোন শেষ থাকে না। সে ঐ সম্মানকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি মূল্যবান বলে মনে করে।
 
মানুষকে দেখানো বা বলতে আনন্দ পায়। মানুষ ঐ ব্যক্তির প্রতি আকৃষ্ট হয়। সরকার তাকে একটি সম্মানের কারণে বিভিন্ন দিক থেকে তাকে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা করে দেয়। যে ব্যক্তি হাশরের মাঠে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার পাবে তার কি ধরণের আনন্দ ও খুশি হবে? কোন মুসলমান আছে যে এটা কামনা করে না। এমনিভাবে হাশরের মাঠে আল্লাহর আরশের ছায়াতলে স্থান পাওয়ার ব্যাপারে হয়ত আজকে আমরা পরিপূর্ণ অনুমান করতে পারব না, যে তার সম্মান কত পরিমাণে হবে, কিন্তু দুনিয়ার অনুমানে এতটুকু চিন্তা করা যায় যে, কোন বাদশা বা প্রধান মন্ত্রী কাউকে যদি তার বাড়ীতে দাওয়াত করে তাহলে তার জন্য এ দাওয়াতকেই বিরাট কিছু মনে করা হবে। 

আপনার পছন্দের আরও বই




আর দাওয়াতের স্থলে যে ব্যক্তির প্রধান মন্ত্রীর যত নিকটে স্থান মিলবে সে তত বেশি ঐ স্থানে খুশি হবে এবং অন্যদের ওপর গৌরব বোধ করবে যে প্রধান মন্ত্রীর সাথে তার কত গভীর সম্পর্ক এবং প্রধান মন্ত্রীর নিকট তার কত সম্মান। আল্লাহর কোন তুলনা নেই। তিনি অতুলনীয়, তিনি সর্ব শ্রেষ্ট, তিনি চিরস্থায়ী, চিরঞ্জীব, তিনি পাক ও পবিত্র, হাশরের মাঠে যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় হবে, বা যে আরশের ছায়া তলে স্থান পাবে, তার আনন্দ কত বেশি হবে? হে আল্লাহ্ তুমি তোমার দয়ায় ও অনুগ্রহে আমাদেরকে তাদের অর্ন্তভুক্ত কর।

নিচে আমরা কিছু সৎ আমলের কথা উল্লেখ করব যে কারণে হাশরের মাঠে বিশেষ সম্মান হাসিল হবে।

১। আযানঃ “নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ “ আযান দাতা কিয়ামতের দিন উঁচু পর্দান বিশিষ্ট হবে"। (ইবনে মাযা)

২। ইনসাফঃ “নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ “যারা ন্যায় বিচার করে, তারা হাশরের মাঠে আল্লাহর ডান হাতে নূরের মিম্বরে স্থান পাবে। আর আল্লাহর উভয় হাতই ডান হাত। তারা হবে ঐ সমস্ত লোক যারা ন্যায় পরায়নতার সাথে নির্দেশ দেয়। স্বীয় পরিবারের মধ্যে ন্যায় পরায়নতা পূর্ণ আচরণ করে, আর যে কাজের দায়িত্ব তাদের ওপর অর্পন করে তাতেও তারা ন্যায় পরায়নতা সহ কাজ করে। " (মুসলিম)

৩। নম্রতাঃ “নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নম্রতা প্রকাশ করল এবং এত দামী পোশাক পরল না যা পরার ক্ষমতা সে রাখে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাকে সমস্ত সৃষ্টির সামনে ডেকে তাকে উত্তম পোশাক বাছায়ের এখতিয়ার দিবেন এবং সে তা পরিধান করবে"। (তিরমিযী)

৪। ভজুঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ " হাউজে কাওসারের নিকট আমি তোমাদেরকে তোমাদের ওজুর নিদর্শনের মাধ্যমে চিনেতে পারব। তোমাদের কপাল ও হাত-পা চমকাতে থাকবে। আর এগুণ তোমাদের (উম্মতে মোহাম্মাদীর নামাযীদের) ব্যতীত অন্য আর কোন উম্মতের মধ্যে থাকবে না”। (ইবনু মাথা) 

৫। ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও প্রতিশোধ না নেয়াঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীঃ “যে ব্যক্তি প্রতিশোধ নেয়ার মত পূর্ণ ক্ষমতা রাখে, কিন্তু প্রতিশোধ নেয় না, বরং রাগ নিয়ন্ত্রণ করে, আল্লাহ তাকে সমস্ত সৃষ্টির সামনে ডেকে তাকে ইচ্ছামত হুরে ঈন বাছায়ের সুযোগ দিবেন, যাকে খুশি তাকে সে বিয়ে করবে। (আহমদ)

কিয়ামতের বর্ণনা pdf download করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন...

Post a Comment

স্প্যাম কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন! ধন্যবাদ, পিডিএফ বই ডাউনলোড সমস্যা হচ্ছে? এখানে দেখুন>যেভাবে PDF ডাউনলোড করবেন?

Previous Next

نموذج الاتصال