মা মা ও বাবা pdf ডাউনলোড বই আরিফ আজাদ


রেস্টুরেন্টে একদিন - মা মা ও বাবা পিডিএফ বই Ma ma ma and baba pdf - আরিফ আজাদ justboipdf.com
মা মা ও বাবা pdf download বই আরিফ আজাদ, ma ma ma o baba pdf download


ربِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
হে আমার রব, তাদের প্রতি সেভাবে দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন পালন করেছেন। {alertSuccess}


এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! কে আমার উত্তম আচরণ পাওয়ার বেশি হকদার?

তিনি বললেন, তোমার মা।

লোকটি দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করল, তারপর কে?

তিনি বললেন, তোমার মা।

সে তৃতীয় বার জিজ্ঞেস করল, তারপর কে?

তিনি বললেন, তোমার মা।

ওই ব্যক্তি চতুর্থবার প্রশ্ন করল, তারপর কে?

রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার বাবা। {alertSuccess}


সমকালীন প্রকাশন-এর প্রকাশক একদিন আমাকে তাদের একটি বই সম্পাদনা করে দেওয়ার জন্য বললেন। বই সম্পাদনা করা যে কী পরিমাণ ঝামেলার কাজ— সেটা আমি কিছুটা হলেও তখন বুঝতে শিখেছি। একটি বই সম্পাদনা করা একটি নতুন বই লেখার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়; বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৌলিক একটি বই লেখার চেয়ে সম্পাদনা ঢের শক্ত কাজ; কিন্তু সমস্যা হলো, আমি যে তাদের মুখের উপর 'না' বলে বসব, সে উপায়টাও নেই। কারণ, আলোচ্য বইয়ের পেছনে একটি স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বেদনাবিধূর স্মৃতি। এই বইটি প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল দেশের প্রথিতযশা প্রকাশনী 'সরোবর প্রকাশন থেকে। বইয়ের প্রাথমিক খসড়া দাঁড় করিয়েছিলেন বাক্সের বাইরে এবং তত্ত্ব ছেড়ে জীবনে'র মতো দূর্দান্ত বইয়ের লেখক শরীফ আবু হায়াত অপু ভাই, যিনি আবার পড়ো বইয়ের মতো পাঠকনন্দিত বইয়েরও সম্পাদক। অপু ভাইয়ের সাথে সহযোগী হিসেবে ছিলেন আমাদের সময়কার অন্যতম সুলেখক আরমান ইবন সুলায়মান ভাই। সে যাহোক, এরপর একদিন হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল সরোবর প্রকাশন'। মার্কেটে আসা বন্ধ হয়ে গেল পড়ো, ফেরা এবং বাক্সের বাইরে।

একদিন জানতে পারলাম পড়ো এবং ফেরা নতুন করে বাজারে আসছে। কে আনছে? ‘সমকালীন প্রকাশন’। যাক, আলহামদু লিল্লাহ; বইগুলো নতুন করে বাজারে আসছে দেখে আমি বেশ আপ্লুত হলাম।

যে বইটির কথা বলছি, এই বইটির স্বপ্ন দেখেছিল সরোবর পরিবার। বইটির স্বপ্নস্রষ্টা শরীফ আবু হায়াত অপু ভাই। ‘সরোবর' এবং ‘অপু ভাই? তখন আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এই লোকটিকে দেখতে দেখতেই তো আমরা দ্বীনে

এসেছি। এই লোকটির কাছ থেকেই শেখা, দ্বীনে ফেরার পরে কীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পথ পাড়ি দিতে হয়। অপু ভাই আমাদের জীবনে একটি বাতিঘরের মতো। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা, আমাদের ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু।

দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলাম। মা, মা, মা এবং বাবা আমিই সম্পাদনা করবো। এখনো মনে আছে আমার, এক সন্ধ্যেবেলা অপু ভাইয়ের বাসায় অপু ভাইয়ের সাথে আলাপ করছিলাম। তিনি বললেন, ‘আরিফ, তোমার প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ কত মানুষের কাছে পৌঁছেছে? মানে, কত কপি সেল হয়েছে?

আমি মিনমিন করে বললাম, 'হবে হয়তো পঞ্চাশ হাজারের মতো।

ভাইয়া তখন আমার দিকে সুদৃঢ় এক চাহনি দিয়ে বললেন, 'তোমার বইটি যদি পঞ্চাশ হাজার মানুষের নিকট পৌঁছায়, এই বইটি (মা, মা, মা এবং বাবা) এক লাখ মানুষের নিকট পৌঁছানো উচিত। এটি সেরকম একটি বই।'

ভাইয়া আরও বললেন, 'এই বইটি পড়ে কাঁদবে না, আবেগাপ্লুত হবে না—এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। আমি যখন এই বইটি নিয়ে কাজ করি, একবার এতই আবেগী হয়ে পড়েছিলাম যে, আমি অফিস থেকে এসে গরম পানি করে আমার আম্মার পা ধুইয়ে দিয়েছিলাম। আমার আম্মা কতজনের কাছে যে করেছে সে গল্প! তিনি বলতেন, 'আমার অপু আমার পা ধুইয়ে দেয়।' তো এটি সেরকম একটি বই। বইটি যে একবার পড়বে, তার বাবা-মা যদি বেঁচে থাকে, সে বাবা-মা'র প্রতি এমন অনুগত হয়ে যাবে যে, যা সে কোনোদিন কল্পনাও করেনি। আর, যাদের বাবা-মা বেঁচে নেই, তারা তাদের বাবা-মা'র জন্য সালাতে দাঁড়িয়ে ইই করে কাঁদবে।

আমি অপু ভাইয়ের কথাগুলো মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে শুনছিলাম। এতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে যখন অপু ভাই বলেন, তখন সেটা অবশ্যই অবশ্যই ভিন্নরকম কিছু। মা, মা, মা এবং বাবা বইটি সম্পাদনার আগ্রহ আমার তখন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল।

এরপরের মাসের কথা। সবে বইটির ফাইল নিয়ে বসলাম। গল্পগুলোর সম্পাদনা করতে গিয়ে এমন হচ্ছিল, আমার চোখের পানিতে ল্যাপটপের কী-বোর্ড ভিজে যাচ্ছে। চোখটা বার বার ঝাপসা হয়ে উঠছে। আমার তখন মনে হচ্ছিল, আমি এক্ষুনি উড়াল দিয়ে আমার মা'র কাছে চলে যাই। গিয়ে তাঁর পা ধরে বসে থাকি। এ যাবৎ কালের সমস্ত অন্যায়, অবিচার আর অবাধ্যতার জন্য মাফ চাই... আমার মন চাচ্ছিল, আমি

শিশুদের মতো 'মা মা' বলে হাউমাউ করে কাঁদি...

বাবার বুকে মাথা গুঁজে বলি, 'বাবা, আমাকে তুমি মাফ করে দিয়ো। কত অবাধ্য ছেলেইনা আমি তোমার...।


এরপরের দিন অফিসে জানিয়ে দিলাম যে, আমার এক সপ্তাহ ছুটি দরকার। আমি বাড়ি যাবো। আমার ছুটি মঞ্জুর হলো। আমি ঠিক এর পরেরদিনই চট্টগ্রামে চলে গেলাম। সারাটা পথ আমার মন বিষণ্ণ ছিল। একটা বই একটা মানুষের মনকে এতটা নাড়া দিয়ে যেতে পারে, আমি ভাবতেই পারছিলাম না। সেদিন সন্ধ্যেবেলা অপু ভাইয়ের বলা কথাগুলোও মনে পড়ছিল বার বার...

কথা ছিল বইটি 'বইমেলা ২০১৮ তে প্রকাশিত হবে। সেরকম প্রস্তুতিও ছিল প্রকাশনীর। আমি আমার পক্ষ থেকে সম্পাদিত কপি জমা দিয়ে দিলাম; কিন্তু বেঁকে বসলেন অপু ভাই। বললেন, 'খবরদার! কাঁচা কাজ যেন না হয়। এটা কিন্তু এমন একটা বই—যা মানুষ পড়ে অন্যজনকে পড়তে বলবে। কাঁচা কাজ হলে কিন্তু কোনোভাবেই চলবে না। বইমেলাতেই আনতে হবে—এমন কোনো কথা নেই। তাড়াহুড়োর দরকার নেই। তাড়াহুড়ো করা শাইতানের কাজ। আস্তে আস্তে কাজ করো। বেস্ট একটা কাজ হওয়া চাই।'

অপু ভাইয়ের কথা শুনে 'সমকালীন প্রকাশন' শিডিউল পিছিয়ে দিল। বইমেলায়

আসার কথা থাকলেও বইটা মেলায় আর আসেনি...

আমি বইটি নিয়ে আবার বসলাম। আবার পড়তে গিয়ে দেখলাম, কাজটা আসলেই কাঁচা রয়ে গেছে। সম্পাদনার কাজে এই এক প্যারা। যতবার পড়া হবে, মনে হবে, 'আরে, আরও কাজ করা লাগবে। এটা এভাবে না হয়ে, ওভাবে করলে ভালো হতো...।' ব্যস, বইটি নিয়ে আবারও কাজে লেগে গেলাম। এরপর কেটে গেলো মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন, জুলাই, আগস্ট। ছয়-ছয়টা মাস। দীর্ঘ পরিশ্রম, সমকালীনের সম্পাদক প্যানেলের আপ্রাণ প্রচেষ্টা আর যত্নে অবশেষে বইটি মনের মতো হয়ে উঠল; কিন্তু প্রচ্ছদ...?

মধুর এই বিড়ম্বনার সেখানেই শেষ ছিল না। এরপর এই বইয়ের কাভার নিয়েও কত কাহিনি হলো। যেহেতু আমি সম্পাদনা করেছি, তাই কাভারের আইডিয়া দেওয়ার দায়িত্ব পড়ল আমার ওপর। আমি আইডিয়া দিলাম। কাভার হলো। সেই কাভার আমি আবার অপু ভাইকে দেখালাম। অপু ভাই বললেন, 'চলবে না'।

আবার কাভার করা হলো। আমার পছন্দ হলো। অপু ভাইকে দেখালাম। ভাই বললেন, চলবে না।


তখন আসলে কী যে চলবে, আর কী চলবে না— তাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমি হাল ছেড়ে দিলাম। এবার দায়িত্ব অপু ভাইয়ের। তিনি নিজে সমকালীনের ক্রিয়েটিভ টিমকে কাভারের আইডিয়া বুঝিয়ে দিলেন। এরপর অনেক জল্পনা-কল্পনার শেষে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কাভার হলো, আলহামদু লিল্লাহ!

এই কথাগুলো যখন লিখতে বসেছি, আমার আবারও অপু ভাইয়ের বাসার সেই সন্ধ্যের মুহূর্তগুলোর কথা মনে পড়ছে। ইচ্ছে করছে, ভাইয়ের কথাগুলোর সাথে আমিও বলি, ‘এই বইটি প্রতিটি সন্তানের জন্য অবশ্যপাঠ্য হওয়া উচিত। এটি এমন একটি বই—যা নিছক কোনো বই-ই নয়, এরচেয়ে বেশি কিছু। খুব আত্মবিশ্বাসের সাথেই বলতে পারি, এই বইটি পড়বে কিন্তু মন কেঁদে উঠবে না, বাবা-মা'র জন্য মন খারাপ হবে না, বাবা-মা'র সাথে করা অন্যায়ের ব্যাপারে পাপবোধ জন্ম নেবে না—এমন খুব কম লোকই পাওয়া যাবে, ইন শা আল্লাহ।'

এই বইটি পড়ে যদি কোনো সন্তান তার মা-বাবার প্রতি সদয় হয়, যদি তার হৃদয় বিগলিত হয়, যদি সে তার ভুল বুঝতে পেরে সংশোধিত হয়—তাহলেই এই বইটির পেছনে করা কাজ সার্থক হবে, ইন শা আল্লাহ।

জীবনে আমি হয়তো আরও অনেক বই সম্পাদনা করবো, ইন শা আল্লাহ; আরও ভালো ভালো কন্টেন্ট, ভালো ভালো বই হয়তো পড়ে দেখার, কাজ করে দেওয়ার সুযোগ—আল্লাহ চান তো হবে আমার; কিন্তু, আর কোনো বই পড়ে কি আমার ল্যাপটপের কি-বোর্ড ভিজবে? চোখ বার বার ঝাপসা হয়ে উঠবে? আর কোনো বই নিয়ে কি আমি এরকম স্মৃতিকাতুরে হয়ে পড়ব? আমি জানি না....

মা মা ও বাবা pdf download আরিফ আজাদ বই টি ডাউনলোড করতে নিচে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন।

Post a Comment

স্প্যাম কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন! ধন্যবাদ, পিডিএফ বই ডাউনলোড সমস্যা হচ্ছে? এখানে দেখুন>যেভাবে PDF ডাউনলোড করবেন?

Previous Next

نموذج الاتصال