কাশ্মীরের শাহজাদী pdf free download, সায়ীদ উসমান, kasmirar shajadi pdf |
বই - কাশ্মীরের শাহজাদী
লেখক: সায়ীদ উসমান
প্রকাশনী: রাহনুমা প্রকাশনী
বিষয় : ইসলামিক উপন্যাস ও গল্প pdf
আমার ভালবাসার কাশ্মীরসেই ছোট্টবেলায়, যখন আমি হিফজখানায় পড়ি, বড় ভাইদের কাছে শুনতাম কাশ্মীরের গল্প। কাশ্মীরী ছোট্ট শিশুদের বীরত্বের গল্প, গোঁফ উঁকি দেওয়া কিশোরদের বীরত্বের গল্প, মুহাম্মাদ বিন কাসিমের মতো যুবকদের বীরত্বের গল্প আর হযরত খাওলার মতো কাশ্মীরী বীরাঙ্গণাদের বীরত্বের গল্প। সেইসব গল্প শুনতে শুনতে আমার রক্তে যেন বান ডেকে উঠত। আমি যেন হারিয়ে যেতাম কাশ্মীরে। হয়ে উঠতাম যেন কাশ্মীরী বীরবালক ।যখন বড় হলাম, পেপার-পত্রিকায় পড়তাম আমার ভালবাসার কাশ্মীরের গল্প। কাশ্মীরীদের উপর ভারতীয় হায়নাদের নির্যাতনের গল্প। বড় ভয়ানক সেইসব গল্প। পড়ে পড়ে কাঁথায় মাথা মুড়িয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে কত কেঁদেছি ! আমার ভালবাসার কাশ্মীরের জন্য আমি কত অশ্রু ঝরিয়েছি। আমার ভালবাসার কাশ্মীরের মুক্তি চেয়ে কত রাত ভোর করেছি। আহা, কাশ্মীর, আমার ভালবাসার কাশ্মীর!কাশ্মীরের শাহজাদী - সায়ীদ উসমান {alertSuccess}
একটু পড়ুন:
ডাক্তার-নার্স ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হলো। তাদের মধ্যে একজন ছিল 'অশোক রায় চৌধুরী'। গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের নার্স ছিল সে। একদিন সে এল আমার কাছে। বলল, “স্যার, আমার ছোট একটি বোন আছে, 'পদ্মাবতি রায় চৌধুরী। এ
বছর ‘এমবিবিএস' শেষ করেছে। এই হসপিটালে যদি ওর একটা কাজের
ব্যবস্থা হয়ে যেত, খুব ভালো হতো।” তার আগ্রহ দেখে বললাম, 'ঠিক আছে। সামনেই কয়েকজন শিক্ষানবিস মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। ওকেও ইন্টারভিউ দিতে বলুন। ভালো করলে নিয়ে নেব।'
ইন্টারভিউতে বেশ ভালো করল অশোক রায়ের বোন পদ্মাবতি রায়। হসপিটালে জয়েন করল সে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বর হলো তার। ওষুধপত্র খেয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠল। কিন্তু কিছুদিন পর আবার জ্বর। আবার সুস্থ হলো। এরপর আবার এল জ্বর। বারবার একই অবস্থা হচ্ছিল। এ কারণে ডক্টর'স বোর্ড বসল ওকে নিয়ে। তাদের পরামর্শে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট করানো হলো। জ্বরের ক্ষেত্রে সাধারণত সেগুলো করানো হয় না। টেস্টের রিপোর্টগুলো থেকে যা বেড়িয়ে এল, সে জন্য আসলে কেউ-ই প্রস্তুত ছিল না। জানা গেল, ওর দেহে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। কিন্তু সেটা সাধারণ কোনো ক্যান্সার নয়। বিরল ও আগ্রাসী প্রকৃতির ক্যান্সার- 'নিউরোরাস্টোমা'।
অশোক রায় ছাড়া পদ্মাবতি রায়ের মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ ছিল না। বেশ স্বচ্ছল ছিল অশোক রায় ও পদ্মাবতি। বাবার রেখে যাওয়া টিনশেড বাড়ি থেকে মোটামোটি সম্মানজনক রুপীই ভাড়া পেত তারা। যে কোনো মূল্যেই ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে প্রস্তুত ছিল পদ্মাবতি ও অশোক রায়। কিন্তু সমস্যা বাঁধল রক্ত নিয়ে। পদ্মাবতির রক্তের গ্রুপ এতটাই বিরল যে, সারা বিশ্বে অনুসন্ধান করেও ওর জন্য রক্ত পাওয়া গেল না। ওর রক্তের লোহিত কণিকায় ইন্ডিয়ান বি' নামের একটি এন্টিজেন নেই। তাছাড়া এই ঐ রক্ত শুধু ঐ সমস্ত মানুষের কাছ থেকে পাওয়া যাবে যাদের শরীরে পজেটিভ শ্রেণির রক্ত রয়েছে। এটাও কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যা হয়ে গেল যখন
জানা গেল, এ দু'টি গ্রুপের রক্ত বহনকারীদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই এমন, যাদের রক্তে ‘ইন্ডিয়ান বি' ‘এন্টিজেন'টি আছে। অথচ দরকার হলো তাদের রক্ত, যাদের রক্তে ইন্ডিয়ান বি' 'এন্টিজেন'টি নেই।
'ব্রাদাররাড' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী রক্ত সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী তার জন্য রক্তদাতা খুঁজে বেড়াল। কিন্তু পেল না। বহু মানুষ এল স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার জন্য। তাদের মধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষের রক্ত পরীক্ষা করা হলো, অথচ এমন রক্ত পাওয়াই গেল না—যাতে ‘ইন্ডিয়ান বি 'এন্টিজেন'টি নেই।
রক্ত দিতে আমাদের হসপিটালের প্রায় সবাই রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিল। কিন্তু সবার রক্তেই 'ইন্ডিয়ান বি' এন্টিজেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাই কারও রক্তই গ্রহণ করা যায়নি। বাকি ছিলাম শুধু আমিই। প্যাথলজিস্টরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলেন, আমার রক্তে 'ইন্ডিয়ান বি' 'এন্টিজেন'টি নেই! আমার রক্ত মিলে গেল পদ্মাবতি রায়ের রক্তের সঙ্গে।
সুতরাং আমি রক্ত দিতে শুরু করলাম ওকে। প্রতি চার মাস পর পর এক ব্যাগ করে রক্ত দিতে হতো। রক্ত পাওয়ার পরপরই চিকিৎসা শুরু হলো। কেমোথেরাপি দেওয়া হতে লাগল। এক বছরের মধ্যেই সুস্থ হয়ে র অশেষ দ উঠল পদ্মাবতি । আল্লাহর অশেষ দয়ায় ক্যান্সার পরাজিত হলো।
কিন্তু সুস্থ হয়ে উঠার পরপরই একদম বদলে যেতে শুরু করল পদ্মাবতি। আমার প্রতি প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ল। সেই সঙ্গে ইসলামের প্রতি ভীষণভাবে আকৃষ্ট হলো। আমার আম্মুর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলল। আম্মুর কাছ থেকে দীনি বইপত্র নিয়ে আসত। পড়ে আবার ফেরত দিত। ধীরে ধীরে আম্মুর কাছ থেকে নামাযও শিখে ফেলল। রমযানে রোযা রাখতে শুরু করল। পর্দা শুরু করল। এভাবে ভেতরে ভেতরে পুরোপুরি নিষ্ঠাবতী মুসলিম হয়ে ওঠে সে।
আমাকে একের পর এক চিঠি লিখতে শুরু করে পদ্মাবতি। চিঠিতে আমাকে বিয়ে করার আঁকুতি জানাল। যদিও সে ছিল পরমা সুন্দরী। আচার- আচরণে ভদ্র। চলাফেরায় ছিল শালীন। পর্দা শুরু করার পর সেটা আরো পূর্ণতা পেয়েছিল। কিন্তু তার প্রতি আমার কোনো ভাবানুরাগ ছিল না।
আরও পড়তে পিডিএফ টি ডাউনলোড করতে পারেন!
বি:দ্র: কাশ্মীরের শাহজাদী বইটি free pdf download করিতে চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না!
অনেক ভালো
ReplyDeleteমাশা আল্লাহ
ReplyDelete